SATT ACADEMY

New to Satt Academy? Create an account


or

Log in with Google Account

অষ্টম শ্রেণি (মাধ্যমিক) - বিজ্ঞান - অম্ল, ক্ষারক ও লবণ | NCTB BOOK

কাজ : চুনাপাথরের সাথে হাইড্রোক্লোরিক এসিডের বিক্রিয়া পর্যবেক্ষণ 

প্রয়োজনীয় উপকরণ : চুনাপাথর, চামচ, পাতলা হাইড্রোক্লোরিক এসিড, কাচের ড্রপার, এ্যাপ্রোন 

পদ্ধতি : এ্যাপ্রোনটি পরে নাও। চুনাপাথর গুঁড়া করে চামচে নাও। এবার কাচের ড্রপার দিয়ে পাতলা হাইড্রোক্লোরিক এসিড চামচে যোগ করতে থাক। কোনো পরিবর্তন দেখতে পাচ্ছ? গ্যাসের বুদবুদ উঠছে? হ্যাঁ, গ্যাসের বুদবুদ উঠছে এবং অনেকটা ফেনার মতো মনে হচ্ছে। কারণ চুনাপাথরে (CaCO3) পাতলা হাইড্রোক্লোরিক এসিড যোগ করাতে ক্যালসিয়াম কার্বনেট ও হাইড্রোক্লোরিক এসিডের মধ্যে বিক্রিয়া ঘটে এবং ক্যালসিয়াম ক্লোরাইড ও কার্বন ডাইঅক্সাইড উৎপন্ন হয় এবং সে কারণেই আমরা বুদবুদ দেখি। উৎপন্ন কার্বন ডাইঅক্সাইড চলে গেলে আমরা ক্যালসিয়াম ক্লোরাইডের ও পানির পরিষ্কার দ্রবণ দেখতে পাই।

হাইড্রোক্লোরিক এসিডের মতো প্রায় সকল এসিডই কার্বনেটের সাথে বিক্রিয়া করে কার্বন ডাইঅক্সাইড গ্যাস উৎপন্ন করে ৷

তোমরা শুনে আশ্চর্য হবে যে, কখনো কখনো এসিডের এই ধর্মকে কাজে লাগিয়ে উৎপন্ন CO2 আগুন নেভানোর কাজে ব্যবহৃত হয়৷

তোমরা বলোতো খাবার সোডা (NaHCO3) ও হাইড্রোক্লোরিক এসিডের বিক্রিয়ায় কী ঘটবে?

খাবার সোডা ও হাইড্রোক্লোরিক এসিডের বিক্রিয়ায় সোডিয়াম ক্লোরাইড লবণ, পানি ও CO2 গ্যাস উৎপন্ন হবে।

তোমরা পূর্বের শ্রেণিতে খাবার সোডাতে লেবুর রস বা ভিনেগার যোগ করলে কী ঘটে তা জেনেছ। তোমাদের তা কি মনে আছে? এখানে কী ধরনের বিক্রিয়া ঘটবে লেখ।

কাজ : এসিডের সাথে ধাতু মেশালে কী ঘটে তা পর্যবেক্ষণ

প্রয়োজনীয় উপকরণ : ধাতু হিসেবে দস্তার গুঁড়া (Zn), পাতলা হাইড্রোক্লোরিক এসিড, স্পিরিট ল্যাম্প,
টেস্টটিউব, এ্যাপ্রোন

পদ্ধতি : এ্যাপ্রোন পরে নাও। টেস্টটিউবের অর্ধেক পরিমাণ পাতলা হাইড্রোক্লোরিক এসিড নাও। অল্প পরিমাণ দস্তার গুঁড়া টেস্টটিউবে নেওয়া এসিডে ছেড়ে দাও। কোনো গ্যাসের বুদবুদ উঠছে কি? না উঠলে স্পিরিট ল্যাম্প জ্বালিয়ে টেস্ট টিউবের তলায় হালকা তাপ দাও । গ্যাসের বুদবুদ উঠছে কি?

এটি দস্তা ও হাইড্রোক্লোরিক এসিডের বিক্রিয়ায় উৎপন্ন হাইড্রোজেন গ্যাসের বুদবুদ। এটি হাইড্রোজেন গ্যাস কিনা তা পরীক্ষা করে দেখতে পার। টেস্টটিউবের মুখে একটি জ্বলন্ত দিয়াশলাই ধরে দেখ কী ঘটে? পপ পপ শব্দ করে জ্বলছে? হ্যাঁ ঠিক তাই। এটি হাইড্রোজেন ছাড়া অন্য গ্যাস হলে এমন শব্দ হতো না।

হাইড্রোক্লোরিক এসিডের মতো প্রায় সকল এসিডই ধাতুর সাথে বিক্রিয়া করে হাইড্রোজেন গ্যাস উৎপন্ন করে। 

কাজ : চুনের পানির সাথে এসিডের বিক্রিয়া পর্যবেক্ষণ 

প্রয়োজনীয় উপকরণ : চুন, পানি, সালফিউরিক এসিড, বিকার, লাল লিটমাস কাগজ, নাড়ানি, চিমটা, ড্রপার 

পদ্ধতি : চুনের পানি তৈরি করো। ছোট বিকারে ১০ মিলিলিটার চুনের পানি নাও। এবার চিমটা দিয়ে লাল লিটমাস কাগজকে চুনের পানিতে ডুবাও। লিটমাস কাগজের রং লাল থেকে নীল হয়ে গেল কি? হ্যাঁ, ঠিক তাই। এতে প্রমাণিত হলো চুনের পানি একটি ক্ষারকীয় পদার্থ। এবার পাতলা সালফিউরিক এসিড ড্রপার দিয়ে আস্তে আস্তে যোগ করো ও নাড়ানি দিয়ে নাড়া দাও। লিটমাস কাগজ বিকারের দ্রবণে ডুবিয়ে দেখ এর রঙের কী ধরনের পরিবর্তন হয়। এভাবে আস্তে আস্তে H2SO4 যোগ করতে থাক এবং লিটমাস কাগজ ডুবিয়ে পরীক্ষা করো। এক পর্যায়ে দেখবে লিটমাস কাগজের রং আর পরিবর্তন হচ্ছে না।

কেন লিটমাস কাগজের রং পরিবর্তন হচ্ছে না?
কারণ হলো চুনের পানিতে থাকা ক্যালসিয়াম হাইড্রোক্সাইড [Ca(OH)2] এর সাথে সালফিউরিক এসিড [H2SO4] বিক্রিয়া করে ক্যালসিয়াম সালফেট ও পানি উৎপন্ন করে। ফলে ধীরে ধীরে Ca(OH)2 এর পরিমাণ কমতে থাকে এবং যখন সব Ca (OH)2, H2SO এর সাথে বিক্রিয়া করে ফেলে তখন লিটমাস কাগজের রং আর পরিবর্তন হয় না।

এখানে উৎপন্ন ক্যালসিয়াম সালফেট হলো একটি লবণ। তাহলে আমরা বলতে পারি ক্ষারক ও এসিডের বিক্রিয়ায় উৎপন্ন মূল পদার্থই হলো লবণ।

                                                   আরও কিছু ক্ষারক ও এসিডের বিক্রিয়ায় উৎপন্ন লবণ দেখে নেওয়া যাক :

তবে একমাত্র ক্ষারক ও এসিডের বিক্রিয়াতেই যে লবণ উৎপন্ন হয় তা নয়। অন্য বিক্রিয়ার মাধ্যমেও লবণ উৎপন্ন করা যায়। যেমন- ধাতু ও এসিডের মধ্যে বিক্রিয়ায় লবণ উৎপন্ন হয়।

আবার কার্বনেটের সাথে (যা একটি লবণ) এসিডের বিক্রিয়া ঘটিয়েও লবণ উৎপন্ন করা যায়।

Content added By