SATT ACADEMY

New to Satt Academy? Create an account


or

Log in with Google Account

অষ্টম শ্রেণি (মাধ্যমিক) - ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা - আখলাক | NCTB BOOK

পরিচয়
সমাজের বঞ্চিত জনগোষ্ঠীর কল্যাণে স্বেচ্ছায় গৃহীত কাজকে সমাজসেবা বলে । ব্যাপক অর্থে মানবকল্যাণ ও উন্নয়নের জন্য গৃহীত সকল কর্মসূচিই সমাজসেবা নামে পরিচিত ।

তাৎপর্য
সমাজে নানা শ্রেণি ও পেশার লোক বাস করে। তারা সকলে সমান নয়। তাদের সুযোগ-সুবিধাও সমান নয়। কেউ বিপুল সম্পদের অধিকারী আবার কেউ কপর্দকহীন। সম্পদশালী ব্যক্তিগণ অভাবী জনগোষ্ঠীর উন্নয়নেও তাঁদের সম্পদ ব্যয় করবে। সমাজের অবহেলিত মানুষের কল্যাণে প্রতিষ্ঠান গড়বে। এটাই ইসলামের নির্দেশ। মহান আল্লাহ বলেন-

অর্থ : “এবং তাদের (ধনীদের) ধন-সম্পদে রয়েছে অভাবগ্রস্ত ও বঞ্চিতের হক।” (সূরা আয্-যারিয়াত, আয়াত ১৯)

অর্থশালী ব্যক্তি সমাজের অবহেলিত মানুষের কল্যাণে এমন প্রতিষ্ঠান গড়বে, যে প্রতিষ্ঠানে অভাবী লোকেরা কাজ করে তাদের আর্থিক সমস্যার সুরাহা করবে । বাঁচার অবলম্বন খুঁজে পাবে । গ্রামের উন্নয়নের বিরাট বাধা দূর করার জন্য গ্রামে-গঞ্জে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলাসহ কল্যাণমূলক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা সমাজসেবামূলক কাজ।

সমাজকে অশিক্ষা ও নিরক্ষরতার হাত থেকে মুক্ত করার লক্ষ্যে আল্লাহ তায়ালা কুরআন মজিদে বলেন-

অর্থ : “পাঠ করুন আপনার প্রতিপালকের নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন।” (সূরা আল-আলাক, আয়াত ১) হাদিসে বলা হয়েছে-

অর্থ : “জ্ঞান অন্বেষণ করা প্রত্যেক মুসলমানের উপর ফরজ ।” (ইবনে মাজাহ ও বায়হাকি)

সরকারি ও বেসরকারি উভয় প্রকার উদ্যোগে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হলে সমাজ থেকে নিরক্ষরতা দূর হবে। সমাজ সংশোধনমূলক প্রতিটি কার্যক্রমই সমাজসেবার অন্তর্ভুক্ত। সমাজে কোনো বিশৃঙ্খলা বা গোলযোগ সৃষ্টি হলে তা দূর করতে হবে। কারণ বিশৃঙ্খলা সমাজের পরিবেশকে নষ্ট করে। আল্লাহ তায়ালা বলেন -

অর্থ : “ফিত্না (বিশৃঙ্খলা) হত্যা অপেক্ষা গুরুতর ।” (সূরা আল-বাকারা, আয়াত ১৯১)

সামাজিক নিরাপত্তা রক্ষা করা, পরস্পরের কলহ ও দ্বন্দ্ব মেটানো সমাজসেবার অন্তর্ভুক্ত । আল্লাহ তায়ালা বলেন-

“মুমিনদের দুই দল দ্বন্দ্বে লিপ্ত হলে তাদের মধ্যে মীমাংসা করে দাও।” (সূরা আল-হুজুরাত, আয়াত ৯) 

সর্বস্তরের জনগণের উপকারে আসে এমন সব কাজের অভ্যাস ছোটবেলা থেকেই করা দরকার । যেমন- ভাঙা রাস্তা মেরামত করা, নতুন রাস্তা নির্মাণে সাহায্য করা, পুল-সাঁকো নির্মাণ করা, রুগ্‌ণ ব্যক্তির সেবা করা, আহত ব্যক্তিকে চিকিৎসাকেন্দ্রে পৌঁছে দেওয়া, রাস্তার পাশে ছায়াদার বৃক্ষ রোপণ করা, বৃক্ষ সংরক্ষণ করা ইত্যাদি।

জনসেবা দ্বারা আল্লাহ তায়ালার সাহায্য লাভ করা যায়। রাসুলুল্লাহ (স.) বলেন, “আল্লাহ বান্দাকে ততক্ষণ সাহায্য করেন, যতক্ষণ বান্দা তার ভাইকে সাহায্য করতে থাকে ।” (মুসলিম)

আরবিতে একটি প্রবাদ বাক্য আছে—

অর্থ : “জাতির নেতা তিনিই যিনি তাদের সেবক।”

সমাজ সেবা মানবিক দায়িত্ব। আমরা সমাজের সেবা করব। সমাজকে ভালো করে গড়ে তুলব। সর্বস্তরের মানুষের কল্যাণে আত্মনিয়োগ করব। মানব সেবার মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সাথে সমাজসেবা করব।

কাজ : শিক্ষার্থীরা কয়েকটি দলে ভাগ হয়ে সমাজসেবামূলক কাজের একটি তালিকা তৈরি করে শ্রেণি শিক্ষককে দেখাবে।
Content added By

Promotion