SATT ACADEMY

New to Satt Academy? Create an account


or
Log in with Google Account

এসএসসি(ভোকেশনাল) - ফ্রুট এন্ড ভেজিটেবল কাল্টিভেশন-২ - প্রথম পত্র (নবম শ্রেণি) | NCTB BOOK

প্রাসঙ্গিক তথ্য: 

আনারস দ্বিবর্ষজীবী এবং একটি গাছ একবার মাত্র একটি ফুল দিয়ে থাকে । বাংলাদেশে ৩ জাতের আনারস চাষ হয় । 

যথা- (ক) হানিকুইন (খ) জায়েন্ট কিউ ও (গ) ঘোড়াশাল । 

ভালোজাতের চারা নির্বাচন: আনারস অঙ্গজ পদ্ধতিতেই বংশ বিস্তার করে থাকে। এর চারাকে সাকার বলে 

আনারসের ৫ ধরনের সাকার হয়। যথা- 

১) ক্রাউন সাকার বা কিরিট 

২) ফ্লিপ সাকার বা বোটার চারা ৩। কান্ড সাকার বা কাণ্ডের কেকরী 

৪) প্রাভ/সাকার বা গোড়ার ফেকরী 

৫) স্টাম্প সাকার বা পাড়া

উপকরণ

১) চারা (২) সার (জৈৰ + রাসায়নিক) (৩) কীটনাশক (৫) স্প্রে যন্ত্র (৬) পানি (৭) লাঙল (৮) জোয়াল (৯) মই (১০) মুগুর (১১) খুরপি (১২) কোদাল (১৩) তুমি (১৪) ঝুড়ি ।

আনারস চাষ করার জন্য নিম্নের কাজ/ধাপ অনুসরণ করতে হবে:

১। আনারসের উন্নত জাত নির্বাচন করুন। প্রয়োজনীয় চারা (প্রায় ১৬-১৮ হাজার একরে) সংগ্রহ করুন। 

২। আনারস চাষের জন্য উঁচু স্থান এবং সুনিষ্কাশিত উর্বর দোআশ মাটি নির্বাচন করুন। 

৩। সংগৃহীত চাৱা থেকে বেছে নিয়োগ পার্শ্ব চারা নির্বাচন করুন। নির্বাচিত চারার নিচের দিক থেকে করেকটি পাভা (৫-৭টি) খুলে ফেলুন। চারাগুলো ১-২ সপ্তাহ রোেদ শুকিয়ে নিন । এছাড়াও প্রতি ১০ লিটার পানিতে ২.০-২.৫ চা চামচ এরাটন-৬ ছত্রাকনাশক ফলে চারার গোড়া শাখেন করে নিন। এভাবে চারা প্রস্তুত করে জমিতে লাগান । 

৪। আনারসের জমি উত্তমরূপে লাগল দিয়ে ৪/৫টি চাষ ও মই দিন। মুগুর দিয়ে চেলা ভেঙে ফেলুন। আগাছা হাতে বেছে ফেলুন। ক্ষমি সমতল করে তৈরি করুন। শেষ চাষের সময় একর প্রতি ৮ টন গোবর ও ৮০-১০০ কেজি টিএসপি জমিতে প্রয়োগ করে মাটিতে মিশিয়ে দিন।

৫। আনারসের জন্য প্রথমে বেড তৈরি করে নিন। ৯০ সে.মি. (৩) পরপর ৯০ সে.মি (৩") বেড তৈরি করুন। দুটি পাশাপাশি বেডের মাঝে ৯০ সে.মি (৩) চওড়া ও (১০/১৫ সে.মি (৪"/৬") গভীর নালা তৈরি করুন। নালার মাটি কোদাল দিয়ে তুলে দিন এবং বেড তৈরি করুন। এবারে ঘোড়া সারি পদ্ধতিতে প্রতি বেডে ৬০ সে.মি (২") পরপর সারি করে ২৫-৩০ সে.মি (১০"-১২") দূরে দূরে চারা রোপণ করুন ।

৬। এরপর প্রতিটি গর্তে একটি করে শোধন করা সতেজ চারা রোপণ করুন। চারা এমনভাবে রোপণ করুন যাতে ভেতরের কচি অংশ ২-৩ সে.মি মাটির উপরে থাকে । চারা লাগিয়ে গোড়ার মাটি হাতে ভালোভাবে চেপে শক্ত করে দিন । 

৭ । গাছ সবল হয়ে উঠলে প্রয়োজনে সেচ দিয়ে নিড়িয়ে আগাছা বেছে দিন এবং মাটি নরম ও আলগা রাখুন । সেচের পর জো এলে জমির চটা ভেঙে দিন । এছাড়াও মাঝে মাঝে নিড়িয়ে আগাছা তুলে ফেলুন । মাটি আলগা এবং ঝুরঝুরে রাখুন যাতে সহজে বাতাস চলাচল করতে পারে । 

৮ । বর্ষার পূর্বে ও পরে দুই দফায় সার উপরি প্রয়োগ করুন । প্রতিবার হেক্টর প্রতি ২৫০-৩০০ কেজি ইউরিয়া ও ৩০০-৩৫০ কেজি এমপি সার প্রয়োগ করুন। চারার ১০-১৫ সে.মি দূর দিয়ে মাটি নিড়িয়ে মাটি আলগা করে সার ভালভাবে মিশিয়ে দিন । নালা ভরে পানি রেখে সেচ দিন। শুকনো মৌসুমে ২০ দিন পরপর সেচ দিন । বর্ষাকালে অতিরিক্ত পানি নিকাশের ব্যবস্থা করুন । 

৯ । আনারসের একাধিক চারা জন্মায় । প্রতি গাছে দুটি চারা রেখে বাকীগুলো কেটে দিন । 

১০ । ছাতরা পোকা দমনে প্রতি ১০ লিটার পানিতে চা চামচের ৪-৫ চামচ ম্যালাথিয়ন-৫৭ তরল কীটনাশক গুলে গাছে ভালভাবে স্প্রে করে দিন । 

১১ । কাণ্ড পচা (হার্টরট) রোগ দমনে- (১) গাছের গোড়ায় পানি জমতে দিবেন না, (২) চারা রোপণের পূর্বে শাধেন করে রোপণ করুন, (৩) প্রতি লিটার পানিতে ৩৫-৪০ গ্রাম কপার অক্সিক্লোরাইড-৫০ পাউডার গুলে গাছে ভালভাবে স্প্রে করে দিন । 

১২। রোপণের ১৭/১৮-২৪ মাসের মধ্যে ফল পাকে। ফল যখন পরিপক্ক হয় (কিছু হলুন রং এর হয়) তখন কেটে সংগ্রহ করুন । সংগ্রহের পর ছোট-বড়, ভালো-খারাপ বাছাই করে ফেলুন । দূরে চালান দিতে হলে একটু অধপক্ক ফল সংগ্রহ করুন । ফ্রিজে পাকা ফলকে ৪°-১০° সে. (৪০/৫০° ফা.) তাপে এক মাস সংরক্ষণ করতে পারেন। আনারস থেকে জুস, কোয়াস, জেলি, ভিনিগার তৈরি করেও সংরক্ষণ করতে পারেন। এ ছাড়াও লবণ/চিনি যোগে টিনজাত করেও রাখতে পারেন ।

সতর্কতা 

১। ভারী মাটিতে আনারসের আকার বড় হয় কিন্তু হালকা মাটিতে ফলন ভালো হয়ে থাকে । 

২। বর্ষায় নিকাশের ভাল ব্যবস্থা রাখতে হবে । 

৩। পরিচর্যা কালে যাতে গাছের পাতা না ভাঙে তারদিকে খেয়াল রাখতে হবে । 

৪ । ফলে আঘাত লাগলে সহজেই নষ্ট হয়ে যায়, তাই সাবধানে পরিবহণ করতে হয় ।

Content added By

Promotion

Promotion