SATT ACADEMY

New to Satt Academy? Create an account


or

Log in with Google Account

অষ্টম শ্রেণি (মাধ্যমিক) - বিজ্ঞান - বর্তনী ও চলবিদ্যুৎ | NCTB BOOK

মানুষের চলার জন্য যেমন পথের প্রয়োজন, তড়িৎ প্রবাহের জন্যও প্রয়োজন নির্দিষ্ট পথ। তড়িৎ প্রবাহ চলার এই সম্পূর্ণ পথকেই তড়িৎ বর্তনী বলে। যখন তড়িৎ উৎসের দুই প্রান্তকে এক বা একাধিক রোধ, তড়িৎ যন্ত্র বা উপকরণের সাথে যুক্ত করা হয়, তখন একটি তড়িৎ বর্তনী তৈরি হয়। একটি চাবি বা সুইচের সাহায্যে বর্তনী বন্ধ করা বা খোলা যায়। বর্তনী বন্ধ থাকলে তড়িৎ প্রবাহিত হবে, খোলা থাকলে তড়িৎ প্রবাহিত হবে না।

সাধারণত বর্তনীতে তড়িৎযন্ত্র ও উপকরণসমূহ দু'ভাবে সংযুক্ত করা হয়। এগুলো হলো : (ক) শ্রেণিসংযোগ বর্তনী (খ) সমান্তরাল সংযোগ বর্তনী

 

(ক) শ্রেণি সংযোগ বর্তনী

চিত্র ৯.৫ : শ্রেণিসংযোগ বর্তনী

কোনো বর্তনীতে যদি রোধ, তড়িত্যন্ত্র বা উপকরণসমূহ এমনভাবে সংযুক্ত হয় যেন প্রথমটির এক প্রান্তের সাথে দ্বিতীয়টির অন্য প্রান্ত, দ্বিতীয়টির অপর প্রান্তের সাথে তৃতীয়টির এক প্রান্ত এবং এরূপে সব কয়টি পর্যায়ক্রমে সাজানো থাকে, তবে সেই সংযোগকে অনুক্রম বা শ্রেণিসংযোগ বলে৷

চিত্রে রোধ R2R1, অ্যামিটার A এবং চাবি K-কে অনুক্রমে সংযুক্ত করা হয়েছে। তড়িৎ প্রবাহ পরিমাপের জন্য অ্যামিটার ব্যবহৃত হয় এবং একে বর্তনীতে অন্যান্য উপকরণের সাথে অনুক্রমে যুক্ত করা হয়। অ্যামিটারের প্রান্তদ্বয়ে + এবং – চিহ্ন থাকলে + চিহ্নিত প্রান্তকে অবশ্যই কোষের ধনাত্মক প্রান্তের সাথে যুক্ত করতে হবে। এ সংযোগের ক্ষেত্রে বর্তনী সকল অংশে সর্বদা একই পরিমাণ তড়িৎ প্রবাহ হয়। কিন্তু বিভিন্ন অংশে বিভব পার্থক্য ভিন্ন হতে পারে।

 

(খ) সমান্তরাল সংযোগ বর্তনী

কোনো বর্তনীতে দুই বা ততোধিক রোধ, তড়িৎ উপকরণ বা যন্ত্র যদি এমনভাবে সংযুক্ত থাকে যে সব কয়টির এক প্রান্ত একটি সাধারণ বিন্দুতে এবং অপর প্রান্তগুলো অপর একটি সাধারণ বিন্দুতে সংযুক্ত হয় তবে সেই সংযোগকে সমান্তরাল সংযোগ বলে। সমান্তরাল সংযোগে প্রত্যেকটির মধ্য দিয়ে ভিন্ন ভিন্ন তড়িৎ প্রবাহ চলে কিন্তু প্রত্যেকটির দুই সাধারণ বিন্দুর বিভব পার্থক্য একই থাকে।

চিত্র ৯.৬ : সমান্তরাল বর্তনী

কোনো একটি বর্তনীতে যদি দুটি বাল্ব সংযোগ করা হয় তাহলে কি বাল্ব দুটি একইভাবে জ্বলবে?

সিরিজ সংযোগে একই তড়িৎ প্রবাহ দুটি বাল্বের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়। একটি বাৰ যত উজ্জ্বলভাবে জ্বলত দুটি বাল্ব সিরিজ সংযোজনের ফলে তার চেয়ে কম উজ্জ্বলভাবে জ্বলবে। আবার কোনো একটি বার যদি ন হয়ে যায় তবে সমস্ত বর্তনীর মধ্য দিয়েই তড়িৎ প্রবাহ বন্ধ হয়ে যাবে। ফলে অপর বাল্বটিও জ্বলবে না।

সমান্তরাল সংযোগের প্রত্যেকটি বান্ধের মধ্য দিয়ে ভিন্ন ভিন্ন পথে তড়িৎ প্রবাহিত হয়। তাই একটি বাল্ব নষ্ট হলেও অন্যটি জ্বলবে। প্রতিটি বাল্বই পৃথক পৃথকভাবে জ্বালানো বা নেভানো যাবে। প্রতিটি বাল্বের প্রাস্তদ্বয়ের বিভব পার্থক্য একই থাকবে। অর্থাৎ প্রতিটি বাহুই তড়িৎ কোষের পূর্ণ বিদ্যুৎ চালক শক্তি পাবে। ফলে দুটি বাহুই উজ্জ্বলভাবে জ্বলবে। বাল্ব দুটি যদি এক এক করে তড়িৎ কোবের সাথে সংযু্ক্ত করা হতো তখন বহু উজ্জ্বলভাবে জ্বলতো বাঘ দুটি সমান্তরালভাবে সংযুক্ত করলেও একই উজ্জ্বলতা থাকবে। গৃহে বিদ্যুতায়নের জন সমান্তরাল বর্তনীই সুবিধাজনক।

কাজ : বড় সাদা কাগজে শ্রেণিসযোগ ও সমান্তরাল বর্তনীর চিত্র অংকন করে বিদ্যুৎ প্রবাহ চিহ্নিত করো।
Content added By

Promotion