SATT ACADEMY

New to Satt Academy? Create an account


or

Log in with Google Account

অষ্টম শ্রেণি (মাধ্যমিক) - বিজ্ঞান - উদ্ভিদে বংশ বৃদ্ধি | NCTB BOOK

পরাগায়নকে পরাগসংযোগও বলা হয়। পরাগায়ন ফল ও বীজ উৎপাদন প্রক্রিয়ার পূর্বশর্ত। একটি ফুলের পুংস্তবকের পরাগধানীতে তোমার আঙুলের ডগা ঘষে দেখ। তোমার হাতে নিশ্চয়ই হলুদ বা কমলা রঙের গুঁড়ো লেগেছে। এই গুঁড়ো বস্তুই পরাগরেণু।

ফুলের পরাগধানী হতে পরাগরেণু একই ফুলে অথবা একই জাতের অন্য ফুলের গর্তমুণ্ডে স্থানান্তরিত হওয়াকে পরাগায়ন বলে। পরাগায়ন দু'প্রকার, যথা- স্ব-পরাগায়ন ও পর-পরাগায়ন।

চিত্র ৪.২ : স্ব-পরাগায়ন ও পর-পরাগায়ন

স্ব-পরাগায়ন : একই ফুলে বা একই গাছের ভিন্ন দুটি ফুলের মধ্যে যখন পরাগায়ন ঘটে তখন তাকে স্ব-পরাগায়ন বলে। সরিষা, কুমড়া, ধুতুরা ইত্যাদি উদ্ভিদে স্ব-পরাগায়ন ঘটে।

পর-পরাগায়ন : একই প্রজাতির দুটি ভিন্ন উদ্ভিদের ফুলের মধ্যে যখন পরাগায়ন ঘটে তখন তাকে পর-পরাগায়ন বলে। শিমুল, পেঁপে ইত্যাদি গাছের ফুলে পর-পরাগায়ন হতে দেখা যায়।

পরাগায়নের মাধ্যম : পরাগরেণু স্থানান্তরের কাজটি অধিকাংশ ক্ষেত্রে কোনো না কোনো মাধ্যমের দ্বারা হয়ে থাকে। যে বাহক পরাগরেণু বহন করে গর্তযুক্ত পর্যন্ত নিয়ে যায় তাকে পরাগায়নের মাধ্যম বলে।

বায়ু, পানি, কীট-পতঙ্গ, পাখি, বাদুড়, শামুক এমনকি মানুষ এ ধরনের মাধ্যম হিসেবে কাজ করে থাকে। মধু খেতে অথবা সুন্দর রঙের আকর্ষণে পতঙ্গ বা পাখি ফুলে ফুলে ঘুরে বেড়ায়। এ সময়ে পরাগরেণু বাহকের গায়ে লেগে যায়। এই বাহকটি যখন একই প্রজাতির অন্য ফুলে গিয়ে বসে তখন পরাগরেণু ঐ ফুলের গর্তমুণ্ডে লেগে যায়। এভাবে তাদের অজান্তে পরাগায়নের কাজটি হয়ে যায়।

পরাগায়নের মাধ্যমগুলোর সাহায্য পেতে ফুলের গঠনে কিছু পরিবর্তন লক্ষ করা যায়। একে অভিযোজন বলা হয়। বিভিন্ন মাধ্যমের জন্য অভিযোজনগুলোও আলাদা। অভিযোজনগুলো নিম্নরূপ :

 

পতঙ্গ পরাগী ফুলের অভিযোজন : ফুল বড়, রঙিন, মধুগ্রন্থিযুক্ত। পরাগরেণু ও গর্ভমুক্ত আঠালো এবং সুগন্ধযুক্ত, যেমন— জবা, কুমড়া, সরিষা ইত্যাদি।

বায়ুপরাগী ফুলের অভিযোজন : ফুল বর্ণ, গন্ধ ও মধুগ্রন্থিহীন। পরাগরেণু হালকা, অসংখ্য ও আকারে ক্ষুদ্র। এদের গর্তযুক্ত আঠালো, শাখান্বিত, কখনো পালকের ন্যায়, যেমন— ধান।

পানিপরাগী ফুলের অভিযোজন : এরা আকারে ক্ষুদ্র, হালকা এবং অসংখ্য। এরা সহজেই পানিতে ভাসতে পারে। এসব স্কুলে সুগন্ধ নেই। স্ত্রীফুলের বৃত্ত লম্বা কিন্তু পুং ফুলের বৃত্ত ছোট। পরিণত পুং ফুল বৃত্ত থেকে খুলে পানিতে ভাসতে থাকে, যেমন— পাতাশ্যাওলা।

প্রাণিপরাগী ফুলের অভিযোজন : এসব ফুল মোটামুটি বড় ধরনের হয়। তবে ছোট হলে ফুলগুলো পুষ্পমঞ্জরিতে সজ্জিত থাকে। এদের রং আকর্ষণীয় হয়। এসব ফুলে গন্ধ থাকতে পারে বা নাও থাকতে পারে। যেমন- কদম, শিমুল, কচু ইত্যাদি।

Content added By

Promotion