SATT ACADEMY

New to Satt Academy? Create an account


or

Log in with Google Account

পঞ্চম শ্রেণি (ইবতেদায়ী) - বিজ্ঞান - NCTB BOOK

স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললে আমরা স্বাস্থ্য ভালো রাখতে পারি এবং স্বাস্থ্যের উন্নতি করতে পারি। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরেও আমরা রোগাক্রান্ত হই। আমরা কেন রোগাক্রান্ত হই? আমরা কীভাবে রোগ প্রতিরোধ এবং রোগের প্রতিকার করতে পারি?

Content added By

.

Content added || updated By

(১) সংক্রামক রোগ কী ? 

বিভিন্ন জীবাণু যেমন—ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস, ছত্রাক ইত্যাদি শরীরে প্রবেশের ফলে সৃষ্ট রোগই হলো সংক্রামক রোগ। এ সকল রোগ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে একজন মানুষ থেকে আরেকজন মানুষের দেহে ছড়াতে পারে।

(২) সংক্রামক রোগের বিস্তার

সংক্রামক রোগ বিভিন্নভাবে ছড়াতে পারে। কিছু কিছু রোগ হাঁচি-কাশির মাধ্যমে একজন থেকে আরেক জনে সংক্রমিত হয়। সংক্রমিত ব্যক্তির ব্যবহৃত জিনিস যেমন- গ্লাস, প্লেট, চেয়ার, টেবিল, জামাকাপড়, টয়লেট ইত্যাদি ব্যবহারের মাধ্যমেও আমরা জীবাণু দ্বারা সংক্রমিত হতে পারি। মশার মতো পোকামাকড় বা কুকুরের মতো প্রাণীর কামড়ের মাধ্যমে কিছু রোগ ছড়াতে পারে। আবার দূষিত খাদ্য গ্রহণ এবং দূষিত পানি পানের মাধ্যমেও সংক্রামক রোগ ছড়াতে পারে।

আলোচনা

সংক্রামক রোগ কীভাবে ছড়ায় ? 

সংক্রামক রোগ কীভাবে ছড়ায় ?
 

১. ডানপাশে দেওয়া ছকের মতো খাতায় একটি ছক তৈরি করি।

২. কী কী উপায়ে সংক্রামক রোগ ছড়ায় তার একটি তালিকা তৈরি করি। 

৩. সহপাঠীদের সাথে আলোচনা করে কাজটি সম্পন্ন করি ।

 

(৩) সংক্রামক রোগের প্রকারভেদ

সংক্রামক রোগ অনেক ধরনের হয়ে থাকে যা নিচে দেওয়া হলো ।

বায়ুবাহিত রোগ

বায়ুবাহিত রোগ হলো সে সকল রোগ যা হাঁচি-কাশি বা কথাবার্তা বলার সময় বায়ুতে জীবাণু ছড়ানোর মাধ্যমে হয়ে থাকে। সোয়াইন ফ্লু, হাম, গুটিবসন্ত, যক্ষ্মা এবং ইনফ্লুয়েঞ্জা ইত্যাদি বায়ুবাহিত রোগ ।

পানিবাহিত রোগ

পানিবাহিত রোগ হলো সে সকল রোগ যা জীবাণুযুক্ত দূষিত পানির মাধ্যমে বিস্তার লাভ করে। অনেক ধরনের পানিবাহিত রোগ রয়েছে। যেমন— ডায়রিয়া, কলেরা, আমাশয় ও টাইফয়েড।

জীবাণুবাহিত রোগ

রোগাক্রান্ত ব্যক্তির প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সংস্পর্শে যে সকল রোগ সংক্রমণ হয় তাই ছোঁয়াচে রোগ । যেমন—ফু, ইবোলা, হাম ইত্যাদি। এইডস একটি ভিন্ন ধরনের রোগ,যা এইচআইভি ভাইরাসের মাধ্যমে ছড়ায়। যদিও আক্রান্ত ব্যক্তিকে স্পর্শ করলে বা তার ব্যবহৃত কোনো জিনিস ব্যবহার করলে কেউ এইচআইভি দ্বারা আক্রান্ত হবে না।

প্রাণী ও পোকামাকড়বাহিত সংক্রামক রোগ

বিভিন্ন প্রাণী এবং পোকামাকড়ের মাধ্যমে কিছু জীবাণুবাহিত রোগ ছড়ায়। যেমন— কুকুরের কামড়ের মাধ্যমে জলাতঙ্ক রোগ ছড়ায়। মশার কামড়ের মাধ্যমে ম্যালেরিয়া এবং ডেঙ্গু রোগ ছড়ায় ৷

আলোচনা

সংক্রামক রোগ এর শ্রেণিবিন্যাস

রোগের প্রকারভেদরোগের নাম
বায়ুবাহিত 
পানিবাহিত 
ছোঁয়াচে 
প্রাণী এবং পোকামাকড় বাহিত 

১. ডান পাশে দেখানো ছকের মতো খাতায় একটি ছক তৈরি করি।

২. ছকে সংক্রামক রোগের একটি তালিকা তৈরি করি। 

৩. সহপাঠীদের সাথে আলোচনা করে কাজটি সম্পন্ন করি ।

 

(৪) সংক্রামক রোগের প্রতিরোধ এবং প্রতিকার

সংক্রামক রোগ প্রতিরোধের উপায়

সংক্রামক রোগ জীবাণুর মাধ্যমে হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করা এবং রোগের জীবাণু ছড়িয়ে পড়া প্রতিরোধ করা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। সুষম খাদ্য গ্রহণ করা, নিরাপদ পানি ব্যবহার করা এবং হাত জীবাণুমুক্ত রাখার মাধ্যমে আমরা সুস্থ থাকতে পারি। এ ছাড়া ঘরে পর্যাপ্ত আলো বাতাসের ব্যবস্থা থাকা প্রয়োজন। হাঁচি-কাশির সময় টিস্যু, রুমাল বা হাত দিয়ে মুখ ঢাকা, চারপাশের পরিবেশ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা ইত্যাদির মাধ্যমে আমরা সংক্রামক রোগ প্রতিরোধ করতে পারি। বাড়ির আশপাশে পানি জমতে পারে এমন আবর্জনা যেমন— কৌটা, টায়ার, ফুলের টব ইত্যাদি পরিষ্কার রাখতে হবে। কারণ,এখানে জমে থাকা পানিতে ডেঙ্গু এবং ম্যালেরিয়া রোগের বাহক মশা ডিম পাড়ে। প্রয়োজনীয় টিকা নিয়ে এবং অস্বাস্থ্যকর খাবার পরিহার করেও আমরা রোগমুক্ত থাকতে পারি।

সংক্রামক রোগের প্রতিকার

রোগাক্রান্ত হলে পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিতে হবে, পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে এবং প্রচুর পরিমাণে নিরাপদ পানি পান করতে হবে। এগুলো আমাদের সেরে উঠতে সাহায্য করে। হালকা জ্বর হলে বা সামান্য মাথাব্যথা করলে প্রাথমিকভাবে কিছু ঔষধ গ্রহণ করলে আমরা ভালো বোধ করি। তবে যদি জ্বর ভালো না হয়, ক্রমাগত বমি হতে থাকে এবং তীব্র মাথাব্যথা হয় তবে আমাদের অবশ্যই ডাক্তার দেখাতে হবে।

আলোচনা

রোগ প্রতিরোধে আমরা কী করতে পারি ?

আমাদের কী করণীয় ?
 
 
 

১. ডান পাশের ছকের মতো খাতায় একটি ছক তৈরি করি। 

২. রোগ প্রতিরোধে আমাদের কী করণীয় আছে তার তালিকা তৈরি করি।

৩. সহপাঠীদের সাথে আলোচনা করে কাজটি সম্পন্ন করি।

Content added By

(১) বয়ঃসন্ধি কী? 

বয়ঃসন্ধি হলো জীবনের এমন এক পর্যায় যখন আমাদের শরীর শিশু অবস্থা থেকে কিশোর অবস্থায় পৌঁছায়। সাধারণত মেয়েদের ক্ষেত্রে বয়ঃসন্ধি ৮ থেকে ১৩ বছরে এবং ছেলেদের ক্ষেত্রে ৯ থেকে ১৫ বছর বয়সে শুরু হয়। বয়ঃসন্ধিকালে ছেলে ও মেয়েদের মধ্যে শারীরিক, মানসিক ও আচরণিক পরিবর্তন হয়ে থাকে। 

(২) বয়ঃসন্ধিকালে শারীরিক পরিবর্তন 

বয়ঃসন্ধিকালে শরীরে বেশ কিছু পরিবর্তন দেখা যায়। যেমন- দ্রুত লম্বা হওয়া, শরীরের গঠন পরিবর্তিত হওয়া, একটু বেশি ঘাম হওয়া, ত্বক তৈলাক্ত হওয়া, ব্রণ উঠা ইত্যাদি। এ সময় শরীরের ওজনও বৃদ্ধি পায়। ছেলেদের গলার স্বরের পরিবর্তন হয়, মাংসপেশি সুগঠিত হয় এবং দাড়ি-গোঁফ গজাতে শুরু করে। এ সময় মেয়েদেরও মাংসপেশি সুগঠিত হতে শুরু করে তবে তা ছেলেদের চেয়ে কম। 

(৩) বয়ঃসন্ধিকালে শরীরের যত্ন 

বয়ঃসন্ধিকালে কোনো কিছু নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হতে পারে কিংবা আবেগের দিক থেকে বড় পরিবর্তন আসতে পারে। এ সময় অনেকেই খুব আবেগপ্রবণ হয় বা অল্পতেই হতাশ হয়ে পড়ে। আবার শারীরিক পরিবর্তন দেখে অনেকে দুশ্চিন্তায় ভোগে। এই সময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকা এবং পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ করা খুবই জরুরি। মনে রাখা প্রয়োজন, বয়ঃসন্ধিকাল সবার জীবনেই আসে। এই পরিবর্তন স্বাভাবিক। তাই কোনো কিছু নিয়ে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত না হয়ে মা-বাবা, শিক্ষক কিংবা বড় ভাই বা বোনের সাথে পরামর্শ করতে হবে।

 

আলোচনা

তোমার সমস্যাগুলো কী কী? 

১. ছেলে ও মেয়ের আলাদা দুটি দল গঠন করি। 

২. দলের সদস্যদের নিজেদের বিভিন্ন সমস্যা এবং এ থেকে সমাধানের উপায় নিয়ে আলোচনা করি।

Content added By

সংক্ষিপ্ত উত্তর প্রশ্ন :

১) কীভাবে সংক্রামক রোগ প্রতিরোধ করা যায় তার ৫টি উপায় লেখ । 

২) বায়ুবাহিত রোগ কী ? 

৩) সংক্রামক রোগ প্রতিকারের উপায়গুলো কী ? 

৪) সংক্রামক রোগ এর কারণ কী? 

৫) বয়ঃসন্ধিকালে শরীরের পরিবর্তনের কারণে দুশ্চিন্তা হলে তুমি কী করবে ?

 

বর্ণনামূলক প্রশ্ন:

১) সংক্রামক রোগ কীভাবে ছড়ায় তা ব্যাখ্যা কর। 

২) পানি জমে থাকে এমন বস্তু যেমন— গামলা, টায়ার ইত্যাদি সরিয়ে ফেলার মাধ্যমে আমরা ডেঙ্গু বা ম্যালেরিয়া প্রতিরোধ করতে পারি। এর কারণ কী ? 

৩) পানিবাহিত এবং বায়ুবাহিত রোগের সাদৃশ্য এবং বৈসাদৃশ্য কোথায় ? 

৪) হাঁচি-কাশির সময় হাত দিয়ে মুখ ঢেকে বা রুমাল ব্যবহার করে আমরা সংক্রামক রোগ প্রতিরোধ করতে পারি। এক্ষেত্রে হাতের তালু ব্যবহার করার চেয়ে হাতের উল্টো পিঠ বা কনুই এর ভাঁজ ব্যবহার করা ভালো কেন?

Content added By