SATT ACADEMY

New to Satt Academy? Create an account


or

Log in with Google Account

একাদশ- দ্বাদশ শ্রেণি - ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা - ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা ১ম পত্র | NCTB BOOK

টেলিভিশনের একটা বিজ্ঞাপন । বিষয়বস্তু হলো গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিতে আগুন লেগেছে । টেলিভিশনের পর্দায় এটা দেখে স্ত্রী হা-হুতাশ করছেন। সকল শ্রমিক নিরাপদে বেরিয়ে আসতে পেরেছে এটাও প্রচারিত হচ্ছে। স্বামী স্ত্রীকে প্রবোধ দিচ্ছেন তাদের ফ্যাক্টরিটি একটা বিমা কোম্পানিতে বিমাকৃত। তাই ক্ষতি হলে ক্ষতিপূরণ পাওয়া যাবে। এই যে সম্পত্তির ক্ষতি হলে ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা, মানুষ মারা গেলে নির্দিষ্ট পরিমাণে অর্থ প্রাপ্তির নিশ্চয়তা এর সবই বিমার বদৌলতে সম্ভব হচ্ছে।

চিত্র : যানবাহনে দুর্ঘটনার দৃশ্য

মানুষের জীবন ও সম্পদকে ঘিরে যে ঝুঁকি ও অনিশ্চয়তা বিদ্যমান তার বিপক্ষে আর্থিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাই হলো বিমা। বিমা হলো বিমাকারী ও বিমাগ্রহীতার মধ্যে সম্পাদিত এক ধরনের চুক্তি যেখানে বিমাকারী প্রিমিয়ামের বিনিময়ে বিমাগ্রহীতার জীবন ও সম্পত্তির ঝুঁকি নিজের কাঁধে গ্রহণ করে । সমাজে দু'ধরনের বিমা প্রতিষ্ঠান মূলত কাজ করে । এর একটি হলো জীবন বিমা ও অন্যটি হলো সাধারণ বিমা। জীবন বিমায় মানুষের মৃত্যুজনিত ঝুঁকি মূলত বিমা করা হয়। এটি নিশ্চয়তার চুক্তি। অর্থাৎ বিমাকৃত ব্যক্তির মৃত্যু হলে বা ব্যক্তি অক্ষম হলে কত টাকা ক্ষতি হবে যেহেতু তা নিরূপণ করা যায় না তাই বিমা কোম্পানি চুক্তি মোতাবেক নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ প্রদানের প্রতিশ্রুতি বা নিশ্চয়তা দিয়ে থাকে। ব্যক্তি মারা গেলে বা অক্ষম হলে বিমা কোম্পানি প্রতিশ্রুত অর্থ প্রদানে বাধ্য থাকে। অন্যদিকে সাধারণ বিমা হলো সম্পত্তি বিমা। এটি ক্ষতিপূরণের চুক্তি । অর্থাৎ বিমাকৃত সম্পত্তির আংশিক বা সামগ্রিক যে কোনো ধরনের ক্ষতি হলে বিমা কোম্পানি তা পরিশোধ করে থাকে । নৌ-পথে চলাচলকৃত জাহাজ, জাহাজে বাহিত পণ্য ও মাশুলের জন্য নৌ বিমা, গুদামের মালামাল, কারখানা ইত্যাদির অগ্নিজনিত ক্ষতির জন্য অগ্নিবিমা, সড়কপথে চলাচলকৃত বিভিন্ন যানের জন্য যানবাহন বিমা ইত্যাদি এর বিষয়বস্তু ।

বিমা ব্যবসায়কে ঝুঁকি বণ্টনের ব্যবস্থা নামেও আখ্যায়িত করা হয়। একই ধরনের ঝুঁকির বা আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন ব্যক্তিবর্গ তাদের জীবন ও সম্পত্তি বিমা করার জন্য বিমা কোম্পানি বরাবর হাজির হয়। যদি দেখা যায়, সাধারণত বছরে ১,০০০টা জাহাজ বিমা করা হয়। তবে বিগত বছরগুলোর অভিজ্ঞতা বিবেচনায় নিয়ে বিমা কোম্পানি হিসাব করে যে, সর্বোচ্চ কয়টা জাহাজের ক্ষতি হতে পারে বা কী পরিমাণ অর্থ ক্ষতিপূরণ করতে হতে পারে। সেই বিচারে সম্ভাব্য ক্ষতি বিবেচনায় নিয়ে খরচ ও লাভসমেত প্রিমিয়ায়ের একটা পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়। এই প্রিমিয়ামই হলো বিমা কোম্পানির আয়। যেখানে থেকে ক্ষতি হলে সে ক্ষতিগ্রস্ত জাহাজ মালিকদেরকে ক্ষতিপূরণ করে । বিমার বিষয়বস্তুতে বিমাগ্রহীতার আর্থিক স্বার্থ বা বিমাযোগ্য স্বার্থ না থাকলে বিমা করা যায় না। এক্ষেত্রে উভয় পক্ষের মধ্যে সদ্বিশ্বাসের সম্পর্কের সৃষ্টি হয়। ফলে একে অন্যকে প্রয়োজনীয় সকল তথ্য সরবরাহে বাধ্য থাকে । বিমা সমগ্র বিশ্বেই এখন অত্যন্ত অপরিহার্য সহায়ক ব্যবসায় কার্যক্রম হিসেবে গণ্য। বাংলাদেশে ২০১০ সালের বিমা আইন অনুযায়ী এরূপ ব্যবসায় পরিচালিত ও নিয়ন্ত্রিত হয়ে থাকে ।

Content added By

Promotion