SATT ACADEMY

New to Satt Academy? Create an account


or

Log in with Google Account

অষ্টম শ্রেণি (মাধ্যমিক) - বিজ্ঞান - খাদ্য ও পুষ্টি | NCTB BOOK

দেহের জন্য ভিটামিন ‘সি' অতি প্রয়োজনীয় উপাদান। এ ভিটামিন পানিতে দ্রবীভূত হয় এবং সামান্য তাপেই নষ্ট হয়ে যায়। ভিটামিন ‘সি’ দেহে জমা থাকে না তাই প্রতিদিন খাওয়া দরকার। টক জাতীয় ফল আমলকী, আনারস, পেয়ারা, কমলালেবু, লেবু, আমড়া ইত্যাদি ফলে প্রচুর ভিটামিন 'সি' থাকে। সবুজ শাকসবজি, ফুলকপি, বাঁধাকপি, টমেটো, লেটুসপাতা থেকে আমরা ভিটামিন 'সি' পাই। পাকা ফল অপেক্ষা কাঁচা সবজি ও ফলে এ ভিটামিন বেশি থাকে।

ভিটামিন ‘সি’ পেশি ও দাঁত মজবুত করে, ক্ষত নিরাময় ও চর্মরোগ রোধে সহায়তা করে, কণ্ঠনালি ও নাকের সংক্রমণ প্রতিরোধ করে।

 

অভাবজনিত রোগ 

প্রাপ্ত বয়স্কদের দেহে ভিটামিন ‘সি'-এর অভাব প্রকট হলে নিচের লক্ষণগুলো দেখা দেয় :
• হাড়ের গঠন শক্ত ও মজবুত হতে পারে না।
• হাড় দুর্বল ও ভঙ্গুর হয়ে যায়।
• ত্বক খসখসে হয়, চুলকায়, ত্বকে ঘা হলে সহজে তা শুকাতে চায় না।

 

স্কার্ভি

• দাঁতের মাড়ি ফুলে নরম হয়ে যায়।
• দাঁতের গোড়া আলগা হয়ে যায় এবং গোড়া থেকে রক্ত পড়ে।
• দাঁতের এনামেল উঠে যায় এতে অকালে দাঁত পড়ে যেতে পারে। শিশু ও বয়স্কদের এ রোগ বেশি হয়।
• গ্রন্থি ফুলে যায় এবং মুখে ব্যথা হয়।
• রক্তক্ষরণ সহজে বন্ধ হয় না, ঘা শুকাতে দেরি হয়।
• অন্যান্য রোগ বিশেষ করে সর্দি, কাশি খুব সহজে আক্রমণ করে।

 

প্রতিকার
এ অবস্থায় ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।

 

প্রতিরোধ
কোলের শিশুকে মায়ের দুধের সঙ্গে অন্যান্য পরিপূরক খাদ্য যেমন ফলের রস, সবজির সুপ ইত্যাদি খাওয়াতে হবে।

 

ভিটামিন 'ডি'
ভোজ্য তেল, দুগ্ধ ও দুগ্ধ জাতীয় খাদ্য, বিভিন্ন মাছের তেল, ডিমের কুসুম, মাখন, ঘি, চর্বি এবং ইলিশ মাছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন 'ডি' পাওয়া যায়।

কাজ
• অস্থি ও দাঁতের কাঠামো গঠন।
• অন্ত্রে ক্যালসিয়াম শোষণ বাড়ায় ।
• রক্ত প্রবাহে ক্যালসিয়াম ও ফসফরাসের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে।

 

অভাবজনিত রোগ 

ভিটামিন ‘ডি' এর অভাবে লোহার শোষণ, সঞ্চয় ও হিমোগ্লোবিন তৈরিতে বিঘ্ন ঘটে।

 

রিকেটস

রিকেটস রোগের লক্ষণ
   • ভিটামিন ডি ও ক্যালসিয়ামের অভাবে শিশুদের হাড় নরম হয়ে যায় এবং বৃদ্ধি ব্যাহত হয় ।
   • পায়ের হাড় ধনুকের মতো বেঁকে যায় এবং দেহের চাপে অন্যান্য হাড়গুলোও বেঁকে যায়।
   • হাত-পায়ের অস্থিসন্ধি বা গিট ফুলে যায়।
   • বুকের হাড় বা পাঁজরের হাড় বেঁকে যায়।

 

প্রতিকার
এ অবস্থায় ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।

 

প্রতিরোধ
শিশুকে ভিটামিন ‘ডি' সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ানো উচিত। সূর্যরশ্মি থেকে ভিটামিন ডি পাওয়া যায়। তাই শিশুকে কিছুক্ষণের জন্য রৌদ্রে খেলাধুলা করতে দেওয়া উচিত।

 

অস্টিওম্যালেশিয়া
বয়স্কদের রিকেটস অস্টিওম্যালেশিয়া নামে পরিচিত। এই রোগের লক্ষণগুলো নিম্নরূপ –
   • ভিটামিন ‘ডি' এর অভাবে ক্যালসিয়াম শোষণে বিঘ্ন ঘটে।
   • ক্যালসিয়াম ও ফসফরাসের সঞ্চয় কমতে থাকে।
   • থাইরয়েড গ্রন্থির কাজের পরিবর্তন ঘটে।
   • অস্থি দুর্বল হয়ে অস্থির কাঠিন্য কমে যায় এবং হালকা আঘাতেই অস্থি ভেঙ্গে যাওয়ার অনেক বেশি থাকে।

 

প্রতিকার
উপরের লক্ষণগুলো দেখা দিলে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। উপযুক্ত পরিমাণ ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন “ডি” যুক্ত খাবার গ্রহণ করতে হবে। প্রয়োজনে উক্ত উপাদানগুলোর জন্য ঔষধ সেবন করা একান্ত জরুরি।

 

প্রতিরোধ

   • শিশুকাল থেকেই ভিটামিন 'ডি' ও ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া সুনিশ্চিত করতে হবে।

   • শিশুদেরকে কিছুক্ষণের জন্য রৌদ্রে খেলাধুলার ব্যবস্থা করতে হবে।

 

ভিটামিন ‘ই’

ভোজ্যতেল ভিটামিন ‘ই’ এর সবচেয়ে ভালো উৎস। শস্যদানা, যকৃৎ, মাছ-মাংসের চর্বিতে ভিটামিন ‘ই’ পাওয়া যায়।

কাজ
• ভিটামিন ‘ই’ কোষ গঠনে সহায়তা করে ।
• শরীরের কিছু ক্রিয়া-বিক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে।
• খুব কম ক্ষেত্রে ভিটামিন 'ই' এর অভাব ঘটে এবং এর অভাবজনিত লক্ষণও কম।

 

ভিটামিন ‘কে’
সবুজ রঙের শাকসবজি, লেটুসপাতা, ফুলকপি, বাঁধাকপি, ডিমের কুসুম, সয়াবিন তেল এবং যকৃতে ভিটামিন ‘কে’ পাওয়া যায়।

কাজ
   • দেহে ভিটামিন 'কে' প্রথ্রোম্বিন নামক প্রোটিন তৈরি করে।
   • প্রথ্রোম্বিন রক্ত জমাট বাঁধতে সাহায্য করে।

 

অভাবজনিত সমস্যা
যকৃৎ থেকে পিত্তরস নিঃসৃত হয়। পিত্তরস নিঃসরণে অসুবিধা হলে ভিটামিন কে-এর শোষণ কমে যায়। ভিটামিন ‘কে’– এর অভাবে ত্বকের নিচে ও দেহাভ্যন্তরে যে রক্ত ক্ষরণ হয় তা বন্ধ করার ব্যবস্থা না নিলে রোগী মারা যেতে পারে। এই ভিটামিনের অভাবে অপারেশনের রোগীর রক্তক্ষরণ সহজে বন্ধ হতে চায় না। এতে রোগীর জীবন নাশের আশংকা বেশি থাকে।

নিচের ছকটি পূরণ করো

ভিটামিনউৎসকাজঅভাবজনিত রোগ
‘এ’   
‘সি’   
‘দি’   
‘কে’   
Content added || updated By

Promotion